করোনাকালীন সময়ে গত এক বছরে দেশে ফিরেছে ৩ লাখের বেশি অভিবাসী কর্মী।
২০২০ সালের ১৮ ডিসেম্বর প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
করোনার কারণে ২০২০ সালে পুরো বিশ্ব অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে চাকরির বাজারে। প্রতিনিয়ত চাকরি হারিয়েছে দেশে বা বাহিরে থাকা লাখ লাখ কর্মী। যা থেকে বাদ যায়নি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা এক কোটিরও বেশি বাংলাদেশি প্রবাসী। মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপ থেকে চাকরি হারানোসহ নানা কারণে গত বছর প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্যমতে গত ১ এপ্রিল থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ৩,২৬,৭৫৮ জন অভিবাসী কর্মী দেশে ফেরত এসেছেন।
গত ২৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ থেকে শ্রম অভিবাসনের গতি-প্রকৃতি ২০২০ সাফল্য ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে অভিবাসিদের নিয়ে কাজ করা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিট (রামরু) জানায়, চাকরি হারিয়ে প্রত্যাবর্তনের গতিটা প্রবল হয়েছে গত ৩ মাসে। গড়ে প্রতিদিন দেশে ফিরে আসছেন প্রায় দুই হাজার কর্মী।
রামরু এর প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৭ আগস্ট প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে ২৭ অগাস্ট পর্যন্ত প্রায় ৫ মাসে ২৬টি দেশ থেকে চাকরি হারানোসহ নানা কারণে ৮৫,৭৯০ জন অভিবাসী কর্মী দেশে ফিরেছেন। ফলে, বিগত ৩ মাসে অভিবাসীদের দেশে ফেরার হার তার পূর্ববর্তী পাঁচ মাসের তুলনায় প্রায় চারগুন বৃদ্ধি পেয়েছে বলে এই সংস্থাটি জানায়।
রামরু এর প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, করোনা সহ বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামের পতন, উপসাগরীয় দেশগুলোয় পর্যটন, সেবা ও নির্মাণ খাতে কর্মরত অভিবাসীদের চাকরিচ্যুতি ইত্যাদি কারণে ফেরত পাঠানো হচ্ছে বাংলাদেশি অভিবাসীদের। সে সাথে গত বছর লকডাউনের কারণে সব প্রস্তুতি শেষ করেও যেতে পারেননি এক লাখ নতুন কর্মী।
এদিকে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনে বিদেশ যাওয়া কর্মীদের গত ১ বছরের চিত্র উঠে আসে। যেখানে রামরুর প্রতিবেদন বলছে, ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ১,৮৩,৬৮২ জন বাংলাদেশি কর্মী উপসাগরীয় ও অন্যান্য আরব দেশ এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে গেছেন। এদের অধিকাংশই বিশ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত বিদেশে গেছেন, যার সংখ্যা ছিল ১,৮১,২১৮ জন। পুরো বিশ্বে লকডাউনের কারণে এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে কোন অভিবাসন হয়নি।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, পহেলা অক্টোবর থেকে ১৯ নভেম্বর সময়ের মধ্যে নতুন করে অভিবাসিত হয়েছেন মোট ২,৪৬৪ জন। যেখানে করোনায় গত মার্চ ২০২০ পর্যন্ত অভিবাসনের যে ধারা অব্যাহত ছিল তা চলতে থাকলে এই বছর অভিবাসন ৩.৫২% বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু করোনা ভাইরাসের প্রভাবে এ বছর অভিবাসনের প্রবাহ গত বছরের তুলনায় প্রায় ৭১. ৪৫% কমে যাবে বলে তারা বলছেন।