টিকটকের ভিডিও বানানোর অপরাধে এবার দন্ডিত হয়েছেন মিশরের পাঁচ নারী। ‘নৈতিকতা ভঙ্গ’ হয়েছে- এমন অভিযোগ তুলে পাঁচ নারীর প্রত্যেককে দুই বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে মিসরের আদালত।
গত সোমবার (২৭ জুলাই) হানিন হোসাম, মোয়াদা আল-আধামসহ আরও তিন নারীকে এই দণ্ড দেওয়া হয়েছে। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে তিন লাখ মিসরীয় পাউন্ড করে জরিমানাও করা হয়েছে। ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটকে ভিডিও দেওয়ার ঘটনায় দণ্ডিত নারীরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ পাবেন।
জানা গেছে, তিন মিনিটের একটি ভিডিও প্রকাশের ঘটনায় গত এপ্রিলে হানিন হোসামকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি সেই ভিডিওতে বলেন,
তার সঙ্গে কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারে মেয়েরা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই নারীর ১৩ লাখ অনুসারী ছিল। গত মে মাসে গ্রেফতার হন মোয়াদা আল-আধাম। তিনি টিকটক ও ইন্সটাগ্রামে ব্যঙ্গাত্মক ভিডিও পোস্ট করেন যেখানে তার অনুসারীর সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ।
আইনজীবী আহমেদ হামজা আল-বাহকিরি জানিয়েছেন,
‘এই ঘটনা ব্যক্তিস্বাধীনতা এবং সামাজিক নৈতিকতার মধ্যকার পার্থক্য নিয়ে কঠোর রক্ষণশীল মুসলিম দেশটির গভীর সামাজিক বিভক্তির ওপর আলোকপাত করেছে।’
অন্যদিকে মানবাধিকার আইনজীবী তারেক আল আওয়াদি বলেন,
‘এই নারীদের গ্রেফতারের ঘটনা আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তির দ্রুত উত্থানের সঙ্গে মিসরীয় সমাজের টানাপোড়েনকেই প্রতিফলিত করছে।’
সোমবার দণ্ড ঘোষণার পর নারী অধিকার আইনজীবী ইনতিসার আল সাইদ বলেন,
‘আগে থেকে ধারনা করা গেলেও এই রায় হতাশাজনক। আপিলে কী হয়, দেখা যাক।এসব নারী টিকটক কন্টেন্টে যেসব ভিন্নমত উপস্থাপন করেছেন তার জন্য তাদের কারাদণ্ড দেওয়া হয়নি। তারপরও এটি একটি বিপজ্জনক সূচক।’
নারী অধিকার আইনজীবী ইনতিসার আল সাইদ বলেন,
‘উসকানি ছড়ানো কিংবা পারিবারিক মূল্যবোধ ভঙ্গের অভিযোগ খুবই দুর্বল আর এর ব্যাখ্যা খুবই বিস্তৃত।’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি আইনের মাধ্যমে ইন্টারনেটের ওপর নিয়ন্ত্রণ কঠোর করেছে মিসর। এমনকী পাঁচ হাজারের বেশি অনুসারী থাকলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের যেকোনও অ্যাকাউন্টের ওপরও নজরদারি করছে মিসরীয় কর্তৃপক্ষ।এর আগে ২০১৮ সালে এক নারী গায়কের নাচের ভিডিও অনলাইনে ভাইরাল হয়ে গেলে তাকেও একই অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। তার আগের বছর ভিডিও নিয়ে একই অভিযোগে আরেক নারী পপ গায়ককে দুই বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়।