গত ৪ মাসে বাংলাদেশিদের ভিজিট ভিসায় দুবাই যাওয়ার সংখ্যা বেড়েছে কয়েক গুণ। প্রথমে ভিজিট ভিসায় দুবাই গিয়ে পরে লিবিয়া হয়ে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টা করছে বাংলাদেশিরা। লিবিয়া হয়ে ইউরোপে যাওয়ার সময় সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে মারা যাচ্ছেন অনেকে।
আরব আমিরাতে শ্রমবাজার বন্ধ থাকায় লিবিয়া হয়ে ইউরোপ পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করেন তারা। ২৫ জানুয়ারি ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেয়ার সময় মৃত ৭ বাংলাদেশির মধ্যে ৩ জনই দুবাই গেছেন ভিজিট ভিসায়। এদিকে ৭ জনের মধ্যে আরো দুই জনের মরদেহ দেশে ফিরছে আজ।
অভিবাসন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ওই সব দেশে যারা যায় তাদের অনেকের আত্মীয় স্বজনই ইতালি, গ্রীস বা ইউরোপের অনেক দেশেই আছে। তারা তাদেরকে এক ধরণের প্রলোভন দেখায়। পরে তারা লোকাল পাচারকারীর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পাচারকারী কাছে পৌছায়।
এর আগে গত মাসের ২৫ তারিখে ইতালিতে অবৈধভাবে প্রবেশের চেষ্টায় ভুমধ্যসাগরে ভাসছিলো ২৮৩ অভিবাসীদের এই নৌকা। এরা সবাই বাংলাদেশ আর মিশরের নাগরিক। ইতালির ল্যাম্পেদুসা দ্বীপে ভিড়তে না পেরে ঠান্ডায় মারা যান ৭ জন বাংলাদেশি। বাকিদের উদ্ধার করে ইতালির কোস্ট গার্ড।
নিহত ৭ বাংলাদেশির মধ্যে ৩ জনই গত নভেম্বরে জনশক্তি বু্রোর ছাড়পত্র নিয়ে ভিজিট ভিসায় দুবাই গেছেন। মৃতদের মধ্যে মাদারীপুরের ইমরান হাওলাদারের মরদেহ এসেছে ১২ ফেব্রুয়ারি। তার পরিবার বলছে, ইউরোপ প্রবেশের উদ্দেশ্যেই দালালের প্ররোচনায় দেশ ছাড়েন ইমরান। একইভাবে জয় তালুকদার ও সাজ্জাদুর রহমান স্বজনও লিবিয়া থেকে সাগর পথে ইউরোপ প্রবেশের চেষ্টা করেন।
নয়পল্টনে ইমরানের রিক্রুটিং এজেন্সি এএন লিওপ্যাড এর মালিক শুরুতে ঘটনা অস্বীকার করলেও পরে সুর পাল্টান। তবে জনশক্তি ব্যুরো বলছে দুতাবাসের সংযুক্তি সাপেক্ষে ভিজিট ভিসায় ছাড়পত্র দিয়েছে তারা।
বিমানবন্দরের তথ্য অনুসারে, ভিজিট ভিসায় গড়ে প্রতিদিন ২ হাজার বাংলাদেশি যাচ্ছেন আরব আমিরাতে। মাসের হিসেবে এ সংখ্যা ৬০ থেকে ৭০ হাজার। কিন্তু বিএমইটির হিসেবে, জানুয়ারিতে আরব আমিরাতে যাওয়ার ছাড়পত্র নিয়েছেন মাত্র ১২ হাজার ৮ শ। বাকিদের বিষয়ে কোনো তথ্য নেই সরকারের কাছে।
আইওএমের একটি হিসাব বলছে ২০২১ সালের মাঝামাঝি লিবিয়ায় ২০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি অভিবাসন প্রত্যাশীকে শনাক্ত করা গেছে, যা ত্রিপলীর মোট জনসংখ্যার ২৮ ভাগ।