ভারতের রাজধানী দিল্লির রোহিণীতে সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ) স্কুলের পাশে ভয়াবহ এক বিস্ফোরণ ঘটেছে। এতে স্কুলের দেয়াল, কাছেই পার্ক করে রাখা গাড়ি ও একটি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এ ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। এ ঘটনার পর এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, রোববার (২০ অক্টোবর) সকাল ৭টা ৪৭ মিনিটে প্রশান্ত বিহারে সিআরপিএফ স্কুলের কাছে এই বিস্ফোরণ ঘটে। খবর পেয়ে ফরেনসিক দল এবং দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেলের অফিসাররা ঘটনাস্থলে যান। তবে এখনও বিস্ফোরণের কারণ চিহ্নিত করতে পারেননি তারা।
এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে লিখেছে, স্থানীয় বাসিন্দার রেকর্ড করা একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে বিস্ফোরণস্থলের কাছাকাছি স্থান থেকে ধোঁয়া উড়ছে। ওই প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, “আমি বাড়িতে ছিলাম। তখন একটি বিকট শব্দ শুনি, পরে ধোঁয়ার উড়তে দেখেছি এবং ভিডিও রেকর্ড করেছি, এর বেশি কিছু জানি না। পরে পুলিশের একটি দল এবং একটি অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।”
সিনিয়র পুলিশ অফিসার অমিত গোয়েল ঘটনার পর জানান, ঠিক কী কারণে বিস্ফোরণ ঘটল, তা তদন্ত করতে বিশেষজ্ঞদের ডাকা হয়েছে। পরবর্তী এক আপডেটে পুলিশ বলেছে, তারা এখনও সন্দেহজনক কিছু পায়নি। তবে তদন্তের অংশ হিসেবে ভূগর্ভস্থ স্যুয়ারেজ লাইন পরীক্ষা করা হচ্ছে।
এক বিবৃতিতে পুলিশ জানিয়েছে, “রোববার সকাল ৭টা ৪৭ মিনিটে একটি পিসিআর কল আসে, কলকারী জানান যে সিআরপিএফ স্কুল সেক্টর ১৪ রোহিণীর কাছে প্রচণ্ড শব্দে একটি বিস্ফোরণ ঘটেছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখে স্কুলের দেয়াল, পার্শ্ববর্তী একটি দোকান এবং পার্ক করে রাখা গাড়ির কাচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”
পুলিশের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “ক্রাইম টিম, এফএসএল টিম এবং বোমা নিষ্ক্রিয়কারী স্কোয়াডকে ঘটনাস্থলে ডাকা হয়েছে। পাশাপাশি ক্রাইম স্পটটি ঘিরে রাখা হয়েছে। এছাড়া ফায়ার ব্রিগেডের দলও ঘটনাস্থলে রয়েছে। বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে।”
বিস্ফোরণের বিষয়টি ইতোমধ্যে দেশটির ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ডকে জানানো হয়েছে। তাদের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে পারে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। পুলিশের এক সূত্রের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ‘বিস্ফোরণের পিছনে একটি অপরিশোধিত বোমা’ থাকতে পারে। তবে আসল কারণ জানতে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির একটি দল ঘটনাস্থলে কাজ করছে।
প্রসঙ্গত, গত এক সপ্তাহ ধরেই অর্ধশতাধিক আন্তর্জাতিক ও দেশীয় ফ্লাইটে বোমা হামলার হুমকি পেয়েছে ভারতের ইয়ারলাইনগুলো। যদিও সেসব কলের পর বিমানে অনুসন্ধান করে সন্দেহজনক কিছু মেলেনি। এসব কলের কারণে ফ্লাইট বিলম্বিত হওয়ার পাশাপাশি আকাশপথের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তবে দেশটির বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী রাম মোহন নাইডু বলেছেন, প্রাথমিক তদন্তে কোনও ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত নেই। বেশিরভাগ কলই “অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং প্র্যাঙ্কস্টারা করেছেন”।