মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫

সবশেষ

বাংলাদেশীসহ কিছু অবৈধ অভিবাসীকে গুয়ান্তানামো বে কারাগারে পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র

দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই অবৈধ অভিবাসীদের উপর খড়গহস্ত হয়েছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোসহ জেল, জরিমানা পর্যন্ত সবগুলো ব্যবস্থাই নেয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার কয়েকজন অবৈধ অভিবাসীকে কিউবার গুয়ানতানামো বেতে অবস্থিত কুখ্যাত বন্দিশিবিরে পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে গত শনিবার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে দেশটিতে নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠন।

ওই সংগঠনের নাম দ্য আমেরিকান সিভিল লিবার্টিস ইউনিয়ন (এসিএলইউ)। তারা ওয়াশিংটন ডিসির একটি ফেডারেল আদালতে এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়েছে। গুয়ানতানামো বের কঠিন পরিস্থিতি এবং সেখানে অবস্থান করা অভিবাসীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতার কথা উল্লেখ করে সংগঠনটি বলেছে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী আইন লঙ্ঘন করা হবে।

আদালতে জমা দেওয়া এসিএলইউর নথিতে ১০ জন অবৈধ অভিবাসীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ভেনেজুয়েলা, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের নাগরিকেরা রয়েছেন। তাঁদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়ার চূড়ান্ত নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তাঁরা টেক্সাস, অ্যারিজোনা ও ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যে আটক রয়েছেন। তাঁদের কয়েকজনকে গুয়ানতানামো বে কারাগারে পাঠানো হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করা অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়িত করতে নজিরবিহীন পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি আগে থেকেই দিয়ে আসছেন ট্রাম্প। সেখানে এসিএলইউর এই আইনি পদক্ষেপকে ‘ভিত্তিহীন’ বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলিন। তিনি জানান, এ বিষয়ে বিচার বিভাগের সঙ্গে মিলে পদক্ষেপ নেবেন তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টি নোয়েমের ভাষ্য অনুযায়ী, আটক অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে যাঁরা ‘সবচেয়ে খারাপ’ তাঁদের গুয়ানতানামো বের বন্দিশিবিরে পাঠানো হচ্ছে। তবে তাঁর মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যই বলছে, এর আগে ওই শিবিরে পাঠানো ভেনেজুয়েলার ১৭৭ অভিবাসীর এক–তৃতীয়াংশের বিরুদ্ধে অপরাধের কোনো অভিযোগ ছিল না।

এসিএলইউর আবেদনে বলা হয়েছে, গুয়ানতানামো বের ওই বন্দিশিবিরে জানালাবিহীন কক্ষে অভিবাসীদের প্রতিদিন অন্তত ২৩ ঘণ্টা করে আটকে রাখার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া তাঁদের বিবস্ত্র করে তল্লাশি করা হয়। যোগাযোগ করতে দেওয়া হয় না পরিবারের সঙ্গে। বন্দিশিবিরের নিরাপত্তারক্ষীরা আটক ব্যক্তিদের ওপর মৌখিক ও শারীরিকভাবে আক্রমণও করেন। তাঁদের চেয়ারের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। পান করতে দেওয়া হয় না পানি। নিরাপত্তারক্ষীদের বিরুদ্ধে এক ব্যক্তির হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।

নির্যাতনের এসব ঘটনার জেরে বন্দীদের মধ্যে আত্মহত্যাচেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি ভেনেজুয়েলার কয়েকজন অভিবাসীকে গুয়ানতানামো বেতে স্থানান্তর আটকে দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের একজন ফেডারেল বিচারক। তাঁদের বিষয়েও আদালতে গিয়েছিল এসিএলইউ। পরে তাঁদের নিজ দেশ ভেনেজুয়েলায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *