শুক্রবার, ২ মে ২০২৫

সবশেষ

সৌদিতে প্রবাসীদের আতঙ্কের নাম ‘হুরুব’, প্রতারণার ফাঁদে পড়ে দেশে ফিরছেন শত শত বাংলাদেশি

সাম্প্রতিক সময়ে সৌদি আরবে বাংলাদেশি প্রবাসীদের জন্য সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘হুরুব’। নিয়োগকর্তার অনুমতি ছাড়া কর্মস্থল পরিবর্তন করলে অনেককেই ‘হুরুব’ বা পলাতক হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। দালালদের প্রতারণার কারণে এই পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন অসংখ্য বাংলাদেশি। গত ২৮ এপ্রিল সৌদি আরব থেকে আউটপাস নিয়ে দেশে ফিরেছেন শতাধিক বাংলাদেশি প্রবাসী। তাঁদের অনেকেরই বিরুদ্ধে ‘হুরুব’ অভিযোগ ছিল। জানা গেছে, সৌদিতে যেতে একজন বাংলাদেশি শ্রমিকের গড়ে সাড়ে ৪ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা খরচ হয়।

কিন্তু সেখানে পৌঁছে প্রতারণার শিকার হয়ে অনেকেই কাঙ্ক্ষিত কাজ পান না, ফলে বাধ্য হয়ে কর্মস্থল পরিবর্তন করেন। এতে নিয়োগকর্তারা তাঁদের ‘হুরুব’ ঘোষণা করেন। সৌদি আইনে কোনো কর্মী ছুটি না নিয়ে অন্যত্র গেলে নিয়োগকর্তা তাকে ‘হুরুব’ হিসেবে রিপোর্ট করতে পারেন।

এটি ইমিগ্রেশন অফিসে সরাসরি বা অনলাইনেও করা যায়। হুরুব ঘোষণার ২০ দিনের মধ্যে কর্মী কাজে ফিরলে নিয়োগকর্তা হুরুব বাতিল করতে পারেন। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফিরে না এলে সেই কর্মীকে অবৈধ হিসেবে গণ্য করা হয় এবং জোরপূর্বক দেশে ফেরত পাঠানো হয়।

ভুক্তভোগীদের একজন, মো. হাসান, সাত মাস আগে দালালের মাধ্যমে সাড়ে ৫ লাখ টাকা খরচ করে সৌদিতে গিয়েছিলেন। কম বেতনের কারণে কর্মস্থল পরিবর্তন করলে আগের নিয়োগকর্তা তাকে ‘হুরুব’ দেন। পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়ে জেল খেটে তিনি দেশে ফেরেন। তিনি বলেন-

“সৌদিতে বর্তমানে হাজার হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি এই সমস্যায় ভুগছেন। ‘হুরুব’ মানে পলাতক। এর কারণে আমি অবৈধ হয়ে জেল খেটেছি এবং শেষমেশ দেশে ফিরে এসেছি। যারা যাচ্ছেন, তারা যেন কাজের ধরন, আকামার মেয়াদ ভালোভাবে যাচাই করে যান। নয়তো আমার মতো শূন্য হাতে ফিরতে হবে।”

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সমস্যা মোকাবেলায় সরকারি পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধি, দালালদের দমন ও সৌদিতে শ্রমিকদের সুরক্ষায় কার্যকর কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *