২১ নভেম্বর সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে যে ভূমিকম্পে বাংলাদেশ কেঁপে উঠলো, বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৭। এর উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর মাধবদী। অন্যদিকে, মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) বলছে, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির তীব্রতা ছিল ৫ দশমিক ৫।
ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার পর থেকেই মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতির নানা খবর আসতে শুরু করে। সময়ের সাথে সাথে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও বাড়ছে। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদীতে বাবা-ছেলেসহ পাঁচজন, ঢাকায় চার ও নারায়ণগঞ্জে এক শিশুসহ তিন জেলায় মোট ১০ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কয়েক শত মানুষ।
নরসিংদীঃ
নরসিংদীতে ভূমিকম্পে নিহতরা হলেন শহরের গাবতলী এলাকার দেলোয়ার হোসেন (৩৭), তার ছেলে ওমর ফারুক (১১), পলাশ উপজেলার চরসিন্দুর ইউনিয়নের মালিতা পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাসিন্দা কাজম আলী ভূঁইয়া (৭৫), পলাশের ডাঙ্গা কাজিরচর এলাকায় সিরাজ উদ্দিনের ছেলে নাসির উদ্দিন (৬৫) এবং শিবপুর উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের আজকিতলা (পূর্বপাড়া) গ্রামের ফোরকান (৪০)।
নির্মাণাধীন একটি ভবনের ছাদ থেকে ইট পড়ে দেলোয়ার হোসেন ও তার ছেলে ওমরের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, আতঙ্কে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান নাসির উদ্দিন। ভূমিকম্পের সময় গাছ থেকে পড়ে মারা যান ফোরকান। মাটির ঘরের নিচে চাপা পড়ে মারা যান কাজম আলী ভূঁইয়া।
ঢাকায় নিহত ৪
পুরান ঢাকার বংশালের কসাইটুলিতে ভূমিকম্পে পাঁচতলা ভবনের রেলিং ধসে তিনজন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের (মিটফোর্ড) ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাফিউল ইসলাম, হাজী আব্দুর রহিম (৪৭) ও মেহরাব হোসেন রিমন (১২)।
আর, রাজধানীর মুগদার মদিনা বাগে নির্মাণাধীন ভবনের রেলিং ধসে মো. মাকসুদ (৫০) নামের এক নিরাপত্তা কর্মীর মৃত্যু হয়েছে।নিহত মাকসুদ নোয়াখালীর রামগতি থানার চরসীতা গ্রামের বাসিন্দা।
নারায়ণগঞ্জে দেয়াল ধসে শিশুর মৃত্যু
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় ভূমিকম্পে একটি টিনসেড বাড়ির দেয়াল ধসে ফাতেমা নামের এক বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শিশুর মা কুলসুম বেগম ও প্রতিবেশী জেসমিন বেগম আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভূমিকম্পের সময় ফাতেমাকে কোলে নিয়ে তার মা পথ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। ভূমিকম্প শুরু হলে রাস্তার পাশের ইটের দেওয়াল ধসে তাদের ওপর পড়ে। তাতে ঘটনাস্থলেই শিশু ফাতেমা নিহত হয়।
