সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগে ২৫ এজেন্সির তালিকা—গুজব বলে জানাল কর্তৃপক্ষ

মালয়েশিয়ায় কলিং ভিসায় বাংলাদেশি কর্মী পাঠাতে ২৫টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে বাছাই করা হয়েছে- এমন একটি তালিকা ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। তবে দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় এমন কোনো ধরনের তালিকা বা নোটিশ প্রকাশ করেনি বলে নিশ্চিত করেছে একাধিক সংশ্লিষ্ট সূত্র।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) বিভিন্ন ফেসবুক পেজ, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ও অননুমোদিত অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়া কথিত নোটিশে দাবি করা হয়, মালয়েশিয়া সরকার ২৫টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে অনুমোদন দিয়েছে। তবে অনুসন্ধানে দেখা গেছে এ ধরনের কোনো নথি মালয়েশিয়ার সরকারি ওয়েবসাইট বা অফিশিয়াল ঘোষণায় নেই।

অতীতে ২৫ এজেন্সির মাধ্যমে নিয়োগের বিষয়ে আলোচনা থাকলেও মালয়েশিয়া সরকারের সর্বশেষ নীতিমালা অনুযায়ী বর্তমানে কোনো নির্দিষ্ট তালিকা, কোটা বা মনোনয়ন ঘোষণা করা হয়নি। বরং সরকার বিদেশি কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বাড়াতে নতুন ই-ভিসা ও ডিজিটাল যাচাইকরণ পদ্ধতি চালু করেছে।

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনও জানিয়েছে, কোনো এজেন্সিকে অনুমোদন দেওয়া হলে তা দুই দেশের সরকারি চ্যানেলের মাধ্যমেই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে। গুজব বা যাচাই-বাছাইহীন তথ্যের ওপর নির্ভর না করার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

হাইকমিশন জানায়, এক্ষেত্রে কেবল বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশন প্রকাশিত তথ্য অনুসরণ করতে হবে। কোনো এজেন্সির কথা শুনে চুক্তি, টাকা দেওয়া বা পাসপোর্ট জমা না দিতে সতর্ক থাকতে হবে।

মালয়েশিয়া প্রবাসী হারুনুর রশিদ বলছেন, ভুয়া তালিকা প্রকাশের ঘটনা বাংলাদেশি কর্মীদের মধ্যে অস্থিরতা বাড়ায়। যেকোনো গুজব শ্রমবাজারকে অস্থিতিশীল করে তোলে। প্রার্থীরা ভুল তথ্যের ফাঁদে পড়ে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সামাজিক মাধ্যমে ভুয়া তথ্য বিস্তার রোধে দুই দেশের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে আরও সক্রিয় ও নজরদারি জোরদার করতে হবে। একই সঙ্গে কর্মী ও সাধারণ মানুষকে যাচাই-বাছাই ছাড়া কোনো তথ্য বিশ্বাস না করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

অভিবাসন নীতিবিষয়ক বিশেষজ্ঞ ড. এম. নিয়াজ আসাদুল্লাহর মতে, সামাজিক মাধ্যমে ভুয়া তালিকার প্রচার মূলত দালালচক্রের কৌশল। তারা অনিশ্চয়তার সুযোগ নিয়ে সাধারণ প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার চেষ্টা করে। প্রবাসে কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দালালরা বিকল্প পথ খুঁজছে। এই ধরনের গুজব তারই অংশ।

তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার শিল্পখাত এখনো শ্রমঘাটতির মুখে থাকলেও নিয়োগ পদ্ধতি ডিজিটাল ও নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। ফলে আগের মতো নির্দিষ্ট এজেন্সির ওপর নির্ভর করার নীতি এখন আর অগ্রাধিকার নয়। সরকার চাইছে অতিরিক্ত খরচ, মানবপাচার ও দুর্নীতি ঠেকাতে নিয়োগব্যবস্থাকে সরাসরি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে স্থানান্তর করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *