বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫

জঙ্গলে ধর্ষণের নাটক সাজালো দুই সন্তানের জননী

পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে এক তরুণী। তিনি নিজেকে শরীয়তপুর সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় পরিচয় দেন। তবে তদন্তে গিয়ে ভিন্ন তথ্য পেয়েছে পুলিশ।

গণমাধ্যমকে পুলিশ বলছে, ওই তরুণী কলেজ শিক্ষার্থী নয়। আমরা প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি তার বিয়ে হয়েছে দুটি বাচ্ছাও আছে। সে তার বন্ধুর সাথে কোথায় গিয়েছে ফেরার পথে তাকে কেউ মারধর করেছে বলে জানিয়েছে। তবে ধর্ষণের কথা আমাদের কাছে অস্বীকার করেছে ওই তরুণী।

পুলিশ আরও বলে, আমরা হাসপাতালে কথা বলেছি মেডিকেল রিপোর্টেও ধর্ষণের আলাতম মেলেনি। এছাড়াও ওই নারী আজ (মঙ্গলবার) বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে বলেছেন তাকে ধর্ষণ করা হয়নি।

এ ব্যাপারে পালং মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বলেন, আমরা বিষয়টি জেনে সাথে সাথে হাসপাতালে গিয়েছি ওই তরুণীর সাথে যোগাযোগ করতে তবে সেই আমাদের কাছে ধর্ষণের কথা অস্বীকার করছে।

এদিকে মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা শহরের বনবিভাগ কার্যালয়ের পাশের নির্জন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে বলে জানায় ওই তরুণী। পরে ওই তরুণীকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এবং মেডিকেল টেস্ট করা হয়। ওই তরুণীর অভিযোগ তার সঙ্গে থাকা এক সহপাঠীকেও আটকে রেখে মারধর করা হয়।

ঘটনার পর ভুক্তভোগী বিভিন্ন গণমাধ্যমে অভিযোগ করেন, পরীক্ষা শেষে সহপাঠীর সঙ্গে বাসের অপেক্ষায় ছিলেন তারা। এ সময় কয়েকজন যুবক তাদের পথরোধ করে জোরপূর্বক বনবিভাগের ভেতরে নিয়ে যায়। সেখানে সহপাঠীকে মারধর করে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়, আর তাকে তিন যুবক পালাক্রমে ধর্ষণ করে। প্রায় দুই ঘণ্টা আটকে রেখে ভয়ভীতি দেখিয়ে সড়কে ছেড়ে দেওয়া হয়।

সঙ্গী শিক্ষার্থী জানান, বাস না পেয়ে তারা হাঁটছিলেন; তখন দুই যুবক তাদের ভয় দেখিয়ে ভেতরে নিয়ে যায়। তাকে মারধর করে টাকা দাবি করা হয় এবং বান্ধবীকে আলাদা করে নিয়ে যায়।

ওই ছাত্রী জানান, আমাকে যখন ভিতরে নেওয়া হচ্ছিল তখন দুইজন নারী দাঁড়িয়ে দেখছিল। তারা কিছুই বলেনি। এছাড়াও ভিতরে কয়েকজন কমকর্তাও ছিল আমাকে বাচাঁতে এগিয়ে আসেনি।

শাহাবুদ্দিন নামের এক স্থানীয় বলেন, আমি বাসায় ফিরছিলাম। হঠাৎ দেখি কয়েকজন ছেলে এক মেয়েকে নিয়ে বনবিভাগের দিক থেকে আসছে। এলাকাটি নির্জন হওয়ায় মেয়েটিকে প্রশ্ন করলে সে উত্তর দিতে ভয় পাচ্ছিলো। পরে তার সঙ্গে থাকা একটি ছেলে আমাকে ইশারা করলে তাদের সমস্যায় পড়ার বিষয়টি বুঝতে পারি। তখন পাশে থাকা অন্য যুবকের পরিচয় জিজ্ঞেস করা মাত্রই তারা দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। আমি তাদের ধরার চেষ্টা করলেও পারিনি। পরে মেয়েটি কান্নাকাটি করে আমাদের সব খুলে বলে।

শরিয়তপুর সদর হাসপাতালের ডা. হাবিবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ওই তরুণীর মেডিকেল রিপোর্টে ধর্ষণের কোন আলামত পাওয়া যায়নি। সে সুস্থ রয়েছে এখনও হাসপাতালে ভর্তি আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *