ব্যভিচারসহ বিভিন্ন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় অন্তত দুজন নারীসহ নয়জনকে প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত করেছে আফগানিস্তানের তালেবান প্রশাসন। বুধবার (৯ অক্টোবর) তালেবান কর্তৃপক্ষ নিজেই এ তথ্য জানায়।
তালেবানের সুপ্রিম কোর্ট বিস্তারিত জানিয়ে বলেন, পাঁচজন ব্যভিচার, সমকামিতা ও ডাকাতির জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। এসব অপরাধে তাদের প্রত্যেককে ৩৯টি বেত্রাঘাত ও দুই থেকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে নারী আছে কি না সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ তাখার ও সামানগানে ব্যভিচারের অভিযোগে বুধবার দুই পুরুষ ও নারীকে প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত করা হয়েছে বলে আদালত পৃথকভাবে জানিয়েছেন।
২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে এ পর্যন্ত আফগানিস্তানের বিভিন্ন ক্রীড়া স্টেডিয়ামে শত শত নারী-পুরুষকে বেত্রাঘাত করা হয়েছে। চলতি বছরের জুনে ইসলামপন্থি নেতারা ব্যভিচার ও সমকামিতার মতো ‘অনৈতিক অপরাধের’ দায়ে উত্তরের জনবহুল এক স্টেডিয়ামে ১৪ জন নারীসহ ৬৩ জনকে গণবেত্রাঘাত করেন।
তালেবান ‘কিসাস’ নামে পরিচিত ন্যায়বিচারের ইসলামি ধারণার কথা উল্লেখ করে জনাকীর্ণ ক্রীড়া স্টেডিয়ামে হত্যাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত কমপক্ষে পাঁচজন আফগানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে।
বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ
এই মৃত্যুদণ্ড ও শারীরিক শাস্তি মানবাধিকার এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে বলে দাবি করে অবিলম্বে এসব শাস্তি অবসানের জন্য জাতিসংঘের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ ও আহ্বান জানানো হয়েছে।
তালেবান নেতারা তাদের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থাকে রক্ষা করে যুক্তি দেখিয়েছেন, এটি ইসলামি শরিয়া আইনের ব্যাখ্যার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তারা আফগান নারীদের শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও জনজীবনে প্রবেশাধিকারের উপর তাদের বিধিনিষেধের সমালোচনাও প্রত্যাখ্যান করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্র মানবাধিকার বিষয়ক বিভিন্ন উদ্বেগের মধ্যে নারীদের প্রতি আচরণের কথা উল্লেখ করে তালেবান কর্তৃপক্ষকে আফগানিস্তানের বৈধ সরকার হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করেছে।
১২ বছর বা তার বেশি বয়সী মেয়েদের মাধ্যমিক স্কুলে পড়তে যাওয়ার অনুমতি নেই- এমন বিধিনিষেধ জারি করা বিশ্বের একমাত্র দেশ হলো আফগানিস্তান। দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে নারী শিক্ষার্থীদের নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বেশিরভাগ আফগান নারীকে জাতিসংঘসহ সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতে কাজ করা থেকেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
- সূত্র: ভয়েস অব আমেরিকা
 
				 
															 
															 
															






