শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫

ক্ষমা প্রার্থনায় ট্রাম্পের দরজায় নেতানিয়াহু

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার বিরুদ্ধে চলমান দুর্নীতি মামলায় রাষ্ট্রপতির ক্ষমা পাওয়ার বিষয়টি আরও জোরালো করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে অতিরিক্ত সমর্থন চেয়েছিলেন—এ তথ্য জানাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস, যারা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়েছে।

গত সপ্তাহেই নেতানিয়াহু আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগের কাছে ক্ষমা চেয়ে আবেদন জমা দিয়েছেন। তার আগেই, গত নভেম্বর মাসে নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক মিত্র ডোনাল্ড ট্রাম্প হারজগকে চিঠি লিখে পুরোপুরি ক্ষমা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

অ্যাক্সিওসের প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবারের এক ফোনালাপে নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে অনুরোধ করেন যেন তিনি হারজগের কাছে তার পক্ষে আরও প্রভাব বিস্তার করেন। তবে ট্রাম্প তাকে আশ্বস্ত করলেও নতুন করে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেননি। মার্কিন প্রশাসন ও ইসরায়েলের কর্মকর্তারা এই আলোচনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

একজন মার্কিন কর্মকর্তা জানান, “নেতানিয়াহু এখন চান ট্রাম্প আরও সক্রিয় হোন, কিন্তু প্রেসিডেন্ট ইতোমধ্যেই সীমার মধ্যে যা করার করেছেন।”

গত মাসে হারজগকে পাঠানো চিঠিতে ট্রাম্প নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোকে “রাজনৈতিক চক্রান্ত” এবং “অযৌক্তিক মামলা” বলে উল্লেখ করেন। সমালোচকদের মতে, এ ধরনের হস্তক্ষেপ ইসরায়েলের বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতায় প্রভাব ফেলতে পারে এবং ক্ষমাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের নজির তৈরি করতে পারে।

আরও পড়ুনঃ ইরানে স্বর্ণের বিশাল ভাণ্ডার আবিষ্কারের ঘোষণা

নেতানিয়াহু ইসরায়েলের প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি ক্ষমতায় থাকাকালেই দুর্নীতির অভিযোগে আদালতে বিচারাধীন। তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গ ও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগগুলোতে বলা হয়, তিনি ধনকুবের সহযোগীদের কাছ থেকে দামি উপহার নিয়ে নীতিগত সুবিধা দিয়েছেন। ২০১৯ সালে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়, এবং ২০২০ সালে মামলার কার্যক্রম শুরু হলেও নানা কারণে তা বারবার বিলম্বিত হয়েছে। আইনি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মামলাটি আরও কয়েক বছর চলতে পারে।

সমালোচকদের বক্তব্য, দেশজুড়ে নিরাপত্তা সংকট ও রাজনৈতিক অস্থিরতাকে নেতানিয়াহু তার অবস্থান শক্তিশালী করতে এবং আইনি ঝুঁকি কমাতে ব্যবহার করছেন।

ক্ষমার আবেদনে নেতানিয়াহু দাবি করেন, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা পেলে তিনি ইসরায়েলের “সংকটময় সময়গুলো”তে পুরোপুরি মনোনিবেশ করতে পারবেন। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট হারজগের দপ্তর জানায়, প্রয়োজনীয় আইনি পরামর্শ পাওয়ার পরই তারা এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *