বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
Ads

পরপর পাঁচবার ভূমিকম্প নরসিংদীতে: মাত্র ১৩ দিনে

রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের জেলাগুলো বৃহস্পতিবার ভোরে আবারও ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে। সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে অনুভূত এ কম্পনের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৪ দশমিক ১। ইউরো-মেডিটেরিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, কম্পনের উৎস ছিল টঙ্গীর পূর্ব-উত্তরপূর্বে প্রায় ৩৩ কিলোমিটার ও নরসিংদীর ৩ কিলোমিটার উত্তরে, ভূগর্ভের ৩০ কিলোমিটার গভীরে।

মাত্র ১৩ দিনের মধ্যে নরসিংদী এলাকায় এটি পঞ্চম ভূমিকম্প। ফলে স্থানীয়দের মধ্যে ভয়–উৎকণ্ঠা আরও বেড়ে গেছে। যদিও সর্বশেষ কম্পনে বড় কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

ভোরের কম্পন সম্পর্কে টঙ্গীর বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, “ঘুমের মধ্যে হঠাৎ পুরো ঘর দুলে ওঠে। কয়েকবার দুলতে থাকায় আমরা আতঙ্কে বাইরে বের হয়ে আসি।” আরেক বাসিন্দা শুভ্রজিত জানান, “বারবার ভূমিকম্প হওয়ায় আমরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছি। যেন যে কোনো মুহূর্তে আরও বড় কিছু ঘটবে।”

আরও পড়ুনঃ সারাদেশে খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া চাইল সরকার

নরসিংদীর স্বপন মিয়া বলেন, “প্রথমে বুঝতেই পারিনি। পরে খবর শুনে ভয় লাগছে। এত ঘন ঘন ভূমিকম্প হলে দেশের পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে, তা ভেবে শিউরে উঠছি।” আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ইউনিটের কর্মকর্তা রুবাঈয়্যাৎ কবীর জানান, “এটি ছিল মৃদু মাত্রার ভূমিকম্প। কেন্দ্র ছিল নরসিংদীর শিবপুর এলাকায়।”

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে নরসিংদী জেলা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ধারাবাহিক ভূমিকম্প অনুভূত হচ্ছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ৪ মাত্রার আরেকটি কম্পন হয় ঘোড়াশালে। সোমবার রাতে মিয়ানমারের ফালামে ৪ দশমিক ৯ মাত্রার একটি ভূমিকম্পের প্রভাব চট্টগ্রামেও টের পাওয়া যায়।

২১ নভেম্বর রাজধানীর খুব কাছেই—নরসিংদীর মাধবদীতে—৫ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে, যাতে তিন জেলায় অন্তত ১০ জন প্রাণ হারান এবং শত শত মানুষ আহত হন। পরদিন সকাল–সন্ধ্যায় আরও কয়েক দফা কম্পন রেকর্ড হয় ঢাকা, বাড্ডা ও নরসিংদী এলাকায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বল্প সময়ের মধ্যে এ ধরনের ধারাবাহিক কম্পন ভূগর্ভীয় চাপ বৃদ্ধি ও প্লেট মুভমেন্টের ইঙ্গিত বহন করতে পারে, যা ভবিষ্যতের বড় ভূমিকম্প নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *