দীর্ঘ পাঁচ বছর পর আবারও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় ফেরার লক্ষ্যে মিয়ানমারে জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় ভোরে রাজধানী নেইপিদো এবং বাণিজ্যিক শহর ইয়াঙ্গুনসহ বিভিন্ন অঞ্চলে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে এই ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
২০২১ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর এই প্রথম দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে চলমান গৃহযুদ্ধ ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এই নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
ভোট শুরুর পর রাজধানী নেইপিদোতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মিয়ানমারের জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং। ভোট প্রদানের পর তিনি এক বিবৃতিতে দাবি করেন, এই নির্বাচন সম্পূর্ণ ‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ হবে।
সেনাপ্রধান বলেন, আমরা একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিচ্ছি। যদিও এটি সামরিক বাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে, কিন্তু আমরা আমাদের সুনাম নষ্ট হতে দেব না। তিনি এই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশটিকে পুনরায় গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
এএফপি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, রবিবার ভোরে ইয়াঙ্গুনের কামায়ুত টাউনশিপে একটি ভোটকেন্দ্র উন্মুক্ত করতে দেখা গেছে।
উল্লেখ্য, এই কেন্দ্রটি ২০২১ সালে ক্ষমতাচ্যুত গণতান্ত্রিক নেতা অং সান সু চির দীর্ঘদিনের বাসভবনের খুব কাছেই অবস্থিত। যদিও সু চি বর্তমানে কারাগারে বন্দি এবং তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি এই নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না।
২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর থেকেই মিয়ানমার চরম সহিংসতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সামরিক বাহিনীর সঙ্গে গণতন্ত্রকামী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর লড়াইয়ে দেশজুড়ে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান গৃহযুদ্ধ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ—বিশেষ করে মার্চে সংঘটিত বড় ভূমিকম্প—দেশটির মানবিক পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে। এ সময় দেশটির সাধারণ মানুষ খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের জন্য ব্যাপক সংকটে পড়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ক্ষমতাসীন সামরিক সরকার দেশের খাদ্য সংকটের তথ্য গোপন করতে গবেষক ও ত্রাণকর্মীদের ওপর চাপ তৈরি করছে। এছাড়া অভ্যুত্থানের পর থেকে সাংবাদিকদের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের মধ্য দিয়ে সংবাদ পরিবেশন সীমিত করা হয়েছে।








