বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫

চরম বিশৃঙ্খলা ভারতের বিমানবন্দরগুলোতে

ভারতের প্রধান বিমানবন্দরগুলোতে দ্বিতীয় দিনের মতো চরম বিশৃঙ্খলা চলছে। নতুন ক্রু রোস্টারিং বিধির প্রভাবে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) একদিনেই ইন্ডিগো এয়ারলাইনস ৩০০টির বেশি ফ্লাইট বাতিল করেছে। এর আগের দিন বুধবারও সংস্থাটি বাতিল করে অন্তত ১৫০টি ফ্লাইট, ফলে যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।

হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী বুধবার ইন্ডিগোর অন-টাইম পারফরম্যান্স (ওটিপি) নেমে আসে মাত্র ১৯.৭ শতাংশে—যা আগের দিনের ৩৫ শতাংশ থেকেও উল্লেখযোগ্যভাবে কম।

বিমানবন্দর সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার দিল্লিতে ৩৩টি, হায়দরাবাদে ৬৮টি, মুম্বাইয়ে ৮৫টি এবং বেঙ্গালুরুতে ৭৩টি ফ্লাইট বাতিল হয়। বুধবারও দিল্লিতে ৬৭টি, বেঙ্গালুরুতে ৪২টি, হায়দরাবাদে ৪০টি এবং মুম্বাইয়ে ৩৩টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছিল।

ইন্ডিগো এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগামী ৪৮ ঘণ্টা তারা ‘ক্যালিব্রেটেড অ্যাডজাস্টমেন্ট’ বা নিয়ন্ত্রিত সময়সূচি পরিবর্তন করবে। যাত্রীদের বিকল্প ভ্রমণ ব্যবস্থা বা প্রয়োজনীয় রিফান্ড নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে বলেও সংস্থাটি জানায়।

ফ্লাইট বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে উঠে এসেছে একাধিক বিষয়—প্রযুক্তিগত ত্রুটি, প্রতিকূল আবহাওয়া, অতিরিক্ত বিমান চলাচলের চাপ এবং সম্প্রতি কার্যকর হওয়া নতুন ফ্লাইট ডিউটি টাইম লিমিটেশন (এফডিটিএল) বিধি। ২৯ ও ৩০ নভেম্বর এয়ারবাস এ৩২০ বিমানের সফটওয়্যার প্যাচ হঠাৎ চালু হওয়ায় আগেই চাপের মুখে থাকা ক্রু শিডিউলিং আরও জটিল হয়ে ওঠে।

ডিজিসিএর তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে ইন্ডিগো মোট ১,২৩২টি ফ্লাইট বাতিল করেছে, যার মধ্যে ৭৫৫টির পেছনে ছিল এফডিটিএল-সংক্রান্ত সমস্যাগুলো। এ সময় সংস্থাটির ওটিপি নেমে যায় ৬৭.৭ শতাংশে, যা অক্টোবরের ৮৪.১ শতাংশ থেকে অনেক কম।

নতুন এফডিটিএল বিধি ১ জুলাই ও ১ নভেম্বর দুই দফায় কার্যকর হয়। এতে পাইলটদের সাপ্তাহিক বিশ্রাম ৪৮ ঘণ্টায় উন্নীত করা, রাতের কাজের সময় বাড়ানো এবং রাতের অবতরণের সংখ্যা আগের ছয়টির বদলে সর্বোচ্চ দুইটিতে সীমিত করা হয়—যার লক্ষ্য ছিল কর্মীদের ক্লান্তি হ্রাস এবং ফ্লাইট নিরাপত্তা বৃদ্ধি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *